ব্রেকিং বাংলা নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার দুপুরের পরেই হয়তো সমস্ত জল্পনা সত্যি হতে চলেছে। এদিনই সম্ভবত ঘর ওয়াপসি হতে পারে মুকুল রায়ের। শুধু মুকুলই নন, তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন মুকুল পুত্র শুভ্রাংশুও। সূত্রের খবর এদিনই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন মুকুল। এরপর দুপুর ৩ টেয় তৃণমূল ভবনে বৈঠক, যেখানে থাকবেন অভিষেকসহ প্রথম সারির নেতারাও এবং সম্ভবত তারপরেই মুকুল শুভ্রাংশু যোগদান করবেন ঘাসফুল শিবিরে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। বিজেপি ছাড়ার জন্য সব রকম পরিকল্পনা আটঘাট বেঁধেই করছেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে উঠে আসছিল একাধিক তথ্য। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপির অন্দরেও যে অস্বস্তির ঝড় উঠেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এও আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যায় তাহলে তার সাথে চলে যেতে পারেন একাধিক বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদ। সে ক্ষেত্রে বিজেপি বিধায়ক সংখ্যা কমে যেতে পারে। মুকুল রায়কে দিয়ে বিজেপি বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ভাঙার যে খেলা খেলেছিল এবার মুকুল রায়কে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি ভাঙ্গার ছক তৈরি করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও।
সৌগত রায় সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর বেশ কিছু দাবী করেছিলেন, যা ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। সৌগত রায়ের মন্তব্যে বিজেপি ভাঙা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা এমন ইঙ্গিত মিলেছে। অন্যদিকে মুকুল রায় তার বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন বলেও জানা গেছে। মুকুল ঘনিষ্টেদের সূত্রে পাওয়া খবর, বিজেপিতে গিয়ে তিনি তেমন স্বস্তিতে নেই। বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হলেও তিনি নাকি কিছুটা হলেও দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন গেরুয়া শিবিরের থেকে। আর সেই জল্পনার আগুনেই ঘি ঢাললেন তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূল সাংসদ আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন মুকুলের দলে ফেরা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম কোনও বড় নেতা, যিনি ২০১৭ সালে দল পরিবর্তন করেছিলেন। তার হাত ধরেই একে একে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা দল পরিবর্তন করে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত তালিকা ক্রমশই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছিল। কিন্তু ভোট পরবর্তী বাংলায় ক্রমশই প্রকাশ্যে এসেছে বিজেপি নেতৃত্বে অন্তর্দ্বন্দ্ব। সম্ভবত এটাই মুকুল রায়ের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে মুকুল রায়ের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁকে দেখেতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাকি ব্যক্তিগত স্তরে মুকুলপত্নীর খোঁজখরব নিয়েছিলেন। তবে এখনও পর্যন্ত দল বদলের বিষয়ে নীরবতাই পালন করে এসেছেন মুকুল রায়। তবে তাঁর বাড়িতে নাকি প্রায়ই তাঁর অনুগামীরা আসা যাওয়া করছেন। দফায় দফায় হচ্ছে বৈঠক। দক্ষ সংগঠক হিসেবে গোটা বাংলায় মুকুল রায়ের প্রভাব রয়েছে। সূত্রের খবর জেলার অনুগামীদের সঙ্গেও নাকি তিনি কথাবার্তা বলছেন। আর এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা এটাই প্রমাণ দিচ্ছে যে মুকুলের ঘর ওয়াপসি মাত্র কিছু সময়ের অপেক্ষা।
0 Comments